কোয়ারেন্টাইনে মানসিকতা

আমি যেভাবে কোয়ারেন্টাইনের মাঝে নিজেকে মানসিকভাবে স্থিতিশীল রাখছিঃ

 

পৃথিবীতে যে কয়েকটি রােগ এখন পর্যন্ত সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকভাবে পুরাে পৃথিবীকে নতুন রূপে দৃষ্টিপাত করতে বাধ্য করেছে করােনা ভাইরাস তার মধ্যে অন্যতম। বৈশ্বিক মহামারি করােনা ভাইরাসের সাথে মানুষ নতুন কিছু শব্দের সাথেও পরিচিত হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন এমনি একটি। কোয়ারেন্টাইন অর্থ | হল কোনাে ব্যক্তির শরীরে ভাইরাস প্রবেশ করেছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাকে সবার থেকে

 

আলাদা করে পর্যবেক্ষণে রাখা। কিন্তু যখন কোনাে রােগ মহামারি আকার ধারণ করে তখন সেই রােগ থেকে নিজেদের দূরে রাখার জন্য সামাজিক দূরত্ববজায় রেখে বাড়িতেই অবস্থান করা হলে সেটিকেও কোয়ারেন্টাইন বলা যায়।বর্তমানে আমরা করােনা মহামারির মধ্য দিয়ে। যাচ্ছি। এই মহামারিতে প্রতিদিন অনেক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। যা আমাদের চিন্তায় ফেলছে এবং আমাদের মানসিকভাবে দূর্বল করে দিচ্ছে। কিন্তু এখন আমাদের মানসিকভাবে স্থিতিশীল থাকতে হবে। নিজের এবং অন্যদের মনে সাহস জোগাতে হবে।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে আমাদের দৈনন্দিন রুটিনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। যেমন :বাড়িতে বসে অফিস করার নতুন অভিজ্ঞতা, সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে সবার সাথে যােগাযােগ করা,অনলাইন কেনাকাটায় অভ্যস্ত হওয়া ইত্যাদি। কিন্তু বাইরে গিয়ে সবার সাথে একসাথে কাজ করাবা সময় কাটানাে এগুলাে করা যাচ্ছে না। যা আমাদের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে।এই মহামারিকালীন সময়ে আমি কিভাবে। নিজেকে মানসিকভাবে স্থিতিশীল রাখছি তা আপনাদের জানাচ্ছি….

 

(i)নিজেকে অবগত রাখছিঃ করােনা ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকতে জাতীয় ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পরামর্শগুলাে অবগত হয়ে। মেনে চলার চেষ্টা করছি। এছাড়া টিভি ও WHO এর সংবাদগুলাে থেকে করােনা ভাইরাস। প্রতিরােধের জন্য স্বাস্থ্যবিধিগুলাে মেনে চলছি।

 

(ii)রুটিন মেনে চলাঃ মহামারি সময়ে রুটিন মেনে চলা একটি ভালাে। অভ্যাস। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানাে এবং ওঠা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, ব্যায়াম করা, কাজের সময়, বিশ্রামের সময় রুটিন মেনে করার চেষ্টা করছি।

 

(iii)পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটানােঃ ব্যস্ততার কারণে পরিবারের সব সদস্যদের সাথে এক সঙ্গে সময় কাটানাে হয় না। কিন্তু কোয়ারান্টাইনে পরিবারের সবাই এক সঙ্গে বসে গল্প করা, খাওয়া, খেলা ইত্যাদি করতে পারছি। যা আমাকে মানসিক ভাবে স্থিতিশীল থাকতে সাহায্য করছে।

 

(iv)ধর্মের প্রতি বিশ্বাসঃ প্রায় প্রতিটি মানুষই নিজ ধর্মের রীতিনীতিতে বিশ্বাসী। আমি ইসলাম ধর্মের অনুসারী।আমি বিশ্বাস করি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী সৃষ্টিকর্তা।

এই কোয়ারান্টাইনে আমি আমার ধর্মের রীতিনীতি মেনে চলার চেষ্টা করছি। যা করে আমি মানসিক প্রশান্তি লাভ করি।

 

(v)সামাজিক যােগাযােগঃ কোভিড-১৯ মহামারির কারণে আমাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হচ্ছে। তাই আমি আমার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, সহকর্মীদের সাথে বিভিন্ন সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, হােয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদির সাহায্যে যােগাযােগ করছি, আড্ডা দিচ্ছি। যার ফলে আমি

একাকীত্ব অনুভব করছি না এবং মানসিকভাবে নিজেকে ভালাে রাখতে পারছি।

 

(vi)গাছের পরিচর্যাঃ গাছ লাগানাে একটি শখের কাজ। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে করা হয় না বা গাছ লাগিয়ে রাখলেও গাছের পরিচর্যা করার সময় হয় না। কিন্তু এই কোয়ারেন্টাইনে গাছ লাগিয়েছি এবং গাছের পরিচর্যা করছি। গাছের সবুজ শুধু প্রকৃতিকে সতেজতা দেয় না বরং মানুষের মনকেও সতেজ করে তােলে। আর তাই হয়তাে গাছের পরিচর্যা করে আমি সবুজের মাঝে মানসিক প্রশান্তি খুঁজে পাই।

 

(vii)গল্পের বই পড়াঃ স্কুল এবং প্রাইভেট পড়ার নানা রকম রুটিন এর মাঝে আমাদের সেভাবে গল্পের বই পড়ার সময় ছিল না বললেই চলে। কিন্তু করােনা মহামারীর কারণে আমাদের স্কুল বন্ধ থাকায় আমি আমার অনেক প্রিয় কিছু গল্পের বই পড়ার মাধ্যমে নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পারছি।

 

(viii)অন্যদের সাহায্য করাঃ করােনা মহামারীর কারণে অনেকে কর্মসংস্থান হারিয়েছে। আমি আমার আশেপাশের মানুষের খোঁজখবর রাখছি এবং আমার সাধ্যমতাে তাদের সাহায্য করছি।

 

Mehedi Hasan
School/College Student
GB022

LEAVE REPLY

Your email address will not be published. Required fields are marked *