বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় দুর্যোগ এবং ভয়ের বিষয় হচ্ছে কোভিড- ১৯। এই কোভিড -১৯ এর কারনে পুরো পৃথিবী থমকে আছে। এর অনেক বড় প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের উপর, দীর্ঘ ৭ মাস তারা বাসায় রয়েছে। বেরুতে পারছে না। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে সেটা আমি অনুভব করতে পারি। কোভিড -১৯ এর কারণে মার্চ ১৮ তারিখ থেকে অনির্দিষ্ট কালের দুটি ঘোষনা করা হয়েছিল। আমি সহ প্রায় অনেক শিক্ষার্থীই ভাবতে পারেনি ছুটি এত বেশি দীর্ঘ হবে। এমনিতে আমি ইন্ট্রোভার্ট, তবুও এতদিন বাসায় থাকতে থাকতে আমি প্রচণ্ডরকম বিরক্ত ছিলাম। অল্প কথায় মেজাজ খারাপ হতো, মন খারাপ,ডিপ্রেশন, মাথা ব্যথা। পরে অনুভব করতে পারলাম, এই ছুটি দীর্ঘদিনের হতে চলেছে। কেন আমি এটাকে কাজে লাগাচ্ছি না!
গৃহবন্দী হবার প্রায় দুইমাস পর আমি রিয়েলাইজ করলাম, এই সময়টাকে আমার নিজেকে আবিষ্কার করা উচিত। নিজে কি করতে পারি, কিংবা পারি না! চেষ্টা করা উচিত। তখন ইতিবাচক ভাবে সময় কাটানোর চিন্তা এলো।
কবিতা লিখা এবং পড়া আমার একধরনের শখ। কবিতা ভালোবাসি আমি, কবিতা আবৃত্তি আরোও ভালোভাবে শিখার ট্রাই করলাম। আবৃত্তি করার চেষ্টা করলাম। আমার ভাই ক্রাফটিং ভালো পারে, সেও বিরক্ত ছিলো। তাকে সাহায্যে করলাম। বিভিন্ন ধরনের অনলাইন কোর্স, যেখানে কোর্স কমপ্লিটের পর সার্টিফিকেট দেয়া হয়। সেগুলো করতে লাগলাম।
কোয়ারেন্টাইনে পড়াশুনা তেমন হচ্ছিল না, এইসব কোর্স করে এচিভমেন্ট মন ভালো করে দিচ্ছিলো । পজেটিভ এনার্জি দিচ্ছিলো।
আম্মু সবসময় রান্না শিখতে বলতো, বেশ কিছু রান্না করা শিখেছি। যা খেয়ে আম্মুও প্রশংসা করেছে। নতুন যা শিখেছি এই কোরাইন্টাইনে তা হলো হারমোনিকার দুই একটা টিউন। বিভিন্ন শস্যদানা দিয়ে এক ধরনের আর্ট করা হয়, সেটা শিখেছি। এইসব কিছু শেষে, আজকের দিনে এসে রিয়েলাইজ করতে পারি ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক শুধু আমাদের মগজে।
নিজের ভেতরের আমিকে জানতে সব কিছু চেষ্টা করতে হবে, নিজেকে কাজের মধ্যে বিজি রাখতে হবে মনে রাখতে হবে আমি পারবো। বাসায় বসেও অনেক কিছু করার আছে, একদমই যে কিছু করার নেই তা নয়।
এই কোভিড ১৯ সবাইকে হয়ত একটা জিনিস খুব ভালোভাবে রিয়েলাইজ করিয়েছে,আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমরা। আমাদের দরকার নিজের সঙ্গ নিজেই উপভোগ করার জন্য নিজেকে গড়ে তোলা। কারন, বর্তমান কিংবা ভবিষ্যৎ, দিনশেষে আমরা নিজের কাছেই ফিরে আসি, আসতে হয়।
Umme Silmon
University Category
GB101