আমার যতটুকু বয়স, এই সময়ে ইচ্ছে করে প্রাণ খুলে ঘুরে বেড়াতে। ইচ্ছে করে ডানা মেলে পাখির মতো উড়ে দূর আকাশে হারিয়ে যেতে। মার্চ মাস থেকে কেমন যেন জেলবন্দী হয়ে রয়েছি।
মহামারী যেন সবকিছু থমকে দিয়েছে!! আজ কত মাস ধরে স্কুল বন্ধ। কতদিন বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়না।মনে পড়লে যেন ইচ্ছে করে এখনি ফিরে যাই দিনগুলিতে। আমার বড় আপু,আম্মু,আব্বুকে নিয়েই আমার ছোট্ট পরিবার। করোনার কারণে প্রায় সবাই পুরোটা সময় বাসায় কাটাচ্ছি। এই ফাঁকে পরিবারের সবার সাথে বেশ ভালোই সময় কাটাচ্ছি। নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা চালাচ্ছি।
পড়াশোনা একবারে চর্চা না করলেতো ভুলেই যাবো। গল্পের বই,কবিতার বইও বাদ নেই। হুমায়ুন স্যার,জাফর ইকিবাল স্যারের কিশোর উপন্যাসগুলো বেশ মজার। বই কেনা যেন একটা নেশা আমার।
আমার চারু ও কারুশিল্প নিয়ে কাজ করতে বেশ ভালো লাগে। ইউটিউব দেখে দেখে রোজ বিভিন্ন ছবি আঁকা, নতুন নতুন হস্তশিল্পও চর্চা করছি। অনেক অলসতার মাঝে জীপনযাপন করলে রোজ শারীরিক ও মানসিকভাবে আমরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারি। ইতোমধ্যে নতুন শিখেছি কুইলিং। ঘরে রান্নাবান্নার কাজেও এক-আধটু সাহায্যও করি। নতুন নতুন নাস্তাও বানাই, তার মাঝে শেখাও হচ্ছে। কাজী নজরুল ইসলামের একটি কবিতার লাইনও মনে পড়ে “নানানভাবে নতুন জিনিস শিখছি দিবারাত্র। মা বলেন, “এই কম বয়সে আমার মেয়ের খুব আগ্রহ।”
মহামারী পরিস্থিতিতে পারিবারিক সমস্যায় পড়েনি এমন মানুষ খুব কমই আছে।আমি ও আপু এখনো প্রায়ই বাবা-মা কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকলে তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করি। হাসানোর চেষ্টা করি।তাঁদের উপর শুধু নির্ভর করে থাকলেই হবেনা, তাদের খুঁটি হয়েও দাঁড়াতে হবে। সকলেরই উচিৎ এমন সময়ে আতঙ্কিত না হয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শেখা। জীবনকে আমরাই সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলতে পারি। ব্যস্ততা ও সৃজনশীল কর্মকান্ডের মাধ্যমে আমরা নিজেদের মানসিকভাবে স্থিতিশীল রাখতে পারি।
ধন্যবাদ
Sanjida Akhter
School Student
GB088