ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, জন্ম, মৃত্যু -এই শব্দগুলো কানে আসলেই আমার মধ্যে আতঙ্ক বা ভীতির সৃষ্টি হয়।
কোভিড-১৯ এর প্রভাবে বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা সবাই এখন অবগত এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতিও বেশ ঝুঁকির মুখে। আক্রান্ত হওয়া বা না হওয়া নিয়ে সাধারণভাবে বলতে গেলে একধরণের মানসিক চাপ সকলের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে।
এরকম পরিস্থিতিকে আমি যেভাবে ইতিবাচক মনোভাব ধরে রেখেছিলাম——
ব্যক্তিগত মানসিক স্থিতিস্থাপকার জন্য আমি নিজে
পরিস্থিতিকে মেনে নিয়ে মানসিকভাবে অভিযোজন করার চেষ্ঠা করছিলাম। এই পরিস্থিতিতে আমি করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত খবরাখবরগুলো সবসময় না দেখে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দেখতাম যেমন: দিনে দুই থেকে তিন বার। এভাবে আমার মানসিক ভীতি নিয়ন্ত্রণে থাকার পাশাপাশি সুস্থতা বজায় রাখার চেষ্টা করতাম।
করোনাকালীন সময়ে আমি মানসিক চাপ স্বাভাবিক রাখার জন্য আমার ভালো লাগার কাজগুলোতে মনোনিবেশ করতাম । সময়ের অভাবে যে কাজগুলো আমি করতে পারতেন না এখন ঘরে থেকে সেই কাজগুলো করার চেষ্ঠা করি। সেই সাথে জমে ওঠেছে পরিবারকে সময় দেয়া, একসাথে বসে সিনেমা দেখা, কবিতা পড়া, বই পড়া, গানশোনা। একাডেমিক পড়াশোনার বাইরে অন্যান্য সাহ্যিতের বই এর আগে খুব বেশি পড়া হয়নি, কোয়ারেন্টাইনের এই সময়টা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছি। সেই সাথে ছোট ভাই-বোনদেরকে সময় দেওয়া, তাদের সাথে দুষ্টমি, খুনসুটি, আড্ডা, গল্প বলা সব মিলিয়ে বেশ ভালোই সময় কাটাচ্ছি। পড়াশুনার কারণে মা-বাবার কাছ থেকে দূরে থাকা হয় সেই স্কুল লাইফ থেকেই। বলা যায় বড় হওয়ার পর থেকে বাবা-মায়ের সাথে খুব একটা বেশি সময় আর কাটানো হয়নি। ভার্সিটি লাইফে পদার্পণ করার শুরুতেই যখন এতো লম্বা ছুটি পেলাম তখন সেই সময়টাকে বাবা-মায়ের জন্য উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। বাবার ছোট-খাটো কাজে হেল্প করা থেকে শুরু করে মায়ের সাথে বসে তরকারি কাটা থেকে রান্নাবান্নার কাজে যথাসম্ভব হেল্প করার চেষ্টা করেছি। কোয়ারেন্টাইনে সবটুকু সময় বাবা-মায়ের সাথেই কাটিয়েছি। আমার বাবা-মা আমাকে অনেক সময় দিয়েছেন তাদের সাথেই গল্প আড্ডা হাসি খুশিতে দিনগুলো খুব আনন্দেই কাটছে। আমার মানসিক স্বাস্থ্য ও শারীরিক স্বাস্থ্য এক কথায় এই পরিস্থিতে আমার ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখার জন্য আমার বাবা-মায়ের অবসান সবচেয়ে বেশি।
করোনাকালে আমি আমার জীবনযাপন করার স্টাইল ও বদলানোর চেষ্টা করেছি। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে নিজের যত্ম নিয়েছি । আমিপর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করি, সময়মতো খাবার গ্রহন, ঘুম এবং ঘরে বসেই শারীরিক ব্যায়াম অনুশীলন করি। বুঝার চেষ্টা করেছি এই পরিস্থিতিতে কোন কোন বিষয়গুলো নিজের সুস্থতা বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেই বিষয়গুলো ঘরে বসে অনুশীলন করেছি। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার করা, সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলা, এই বিষয়গুলো জীবনের অভ্যাসের পরিনত করার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি।
আসলে আমরা যা ভাবি তার বাস্তব প্রতিফলনই আমরা আমাদের জীবনে দেখতে পাই। যেকোন পরিস্থিতিতে হোক সেটা যত কঠিন, একমাত্র ইতিবাচক মনোভাবই আমাদের মানসিক শক্তিকে ধরে রাখতে পারে। তাই সবসময় নিজেকে “be positive, be happy”রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
MD. Asif Al Fahim
University Category
GB018