প্রায় আটমাস আমরা কোভিড–১৯ মোকাবিলা করছি। আমাদের জীবনযাত্রা বদলে দিয়েছে করোনা এই আটমাসে আমার জীবনে নানামুখী নতুন অভিজ্ঞতার মাঝে গিয়েছে। ১৭ই মার্চ ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যায়। এর কিছুদিন পর কর্তৃপক্ষ থেকে লকডাউনের ঘোষণা আসে। আমি যে মেসে থাকতাম একে একে সবাই বাসা ছেড়ে চলে যায় গ্রামে। আমি একা হয়ে পড়ি। হঠাৎ একদিন কাজের আন্টি না বলে উনিও রাঁতের আঁধারে শহর ছাড়েন। আমি বেঁচে থাকতে আশাহত হই। তবে মনোবল হারাইনি। কাজের আন্টিকে বাজার করে দিয়েছিলাম মাছ মাংস। উনি এসব আমাকে না বুঝিয়ে দিয়েই চলে গেছেন। রাগ হয়েছিলো উনার উপর।নিয়তির উপর ছেড়ে দিয়ে রাগ প্রশমিত রাখি। এরপর আবার বাজার করে আনলাম। কোথাও কেউ নেই।শহরে জুড়ে ভুতুরে পরিবেশ। শুধু পুলিশের গাড়ির সাইরেন্স ছাড়া কিছুই শুনতে পেতাম না।এরপর জীবন যাত্রায় পরিবর্তন আনি। আমি দিনকে রাতে পরিবর্তন করি। রাতকে দিনে। দিনের আলোয় একাকিত্ব যাতে অনুভূত না হয়, এজন্য সারা কিছু টিচারের অনলাইন ক্লাস করতাম সাথে তামিল মুভি দেখতাম। সবচে বড় অভিজ্ঞতা হলো , এই সময়ে আমি রান্না শিখে গিয়েছিলাম। জীবন বাঁচানোর তাগিদে রান্না করতে হতো এই সময়টা আমাকে ডিসকভারীর Men vs Wild এর বেয়ার গ্রিলস এর প্রোগ্রামটি অনুপ্রানিত করেছে। কিভাবে প্রতিকূল পরিবেশে পজিটিভ থেকে জীবন রক্ষা করা যায়। তা আমি প্রতি মুহুর্তে স্বরণ করেছি। করোনার আগেও ঐ বাসাতে ১১ জন থাকতাম। হঠাৎ করোনা সংখ্যাটা ১১ থেকে ১ এ নামিয়ে আনলো। আমি এভাবে ৪২ দিন একা ছিলাম। একা রান্না করে খেতাম। সারাদিন ঘুমাতাম। আর সারারাত বই পড়ে বা ছবি দেখে কাটাতাম। এই সময়ে আমি কয়েকটি বই পড়েছিলাম। যেমন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রজমানের আমার দেখা নয়া চীন। ইশতিয়াক আহমেদের গতকাল উপন্যাস। সবার প্রিয় সাদাত হোসেনের ছদ্মবেশ থ্রিলারটি পড়ে ছিলাম। এই ৪২ দিন আমি একা কাঁটিয়েছি। বাসায় আম্মু জানতো আমি একা না। আমার সাথে আরো রুমমেট আছে। এরপর, প্রথম রমজান সেহেরী খেয়ে ফজর নামাজ পড়ে লকডাউনের মাঝে দীর্ঘ ১১ ঘন্টা পায়ে হেঁটে, রিক্সা ও সিএনজি করে নিজ বাসায় আসি। বাসায় এসেছি যে সাড়ে ছয় মাসের মতো । আম্মু এই সময়ে রান্না শিখেয়েছেন আমাকে। মাছ, মুরগী, গরু, খাঁসি ও স্পেশাল বিরিয়ানির খিচুড়ি সব রাঁধতে শিখিয়েছেন। মানসিক ভাবে যাতে চাঙ্গা থাকি তারজন্য ব্যায়াম করেছি বাসায়। ফ্যামিলির সাথের কোয়ালিটি টাইম কাঁটিয়েছি। কিছুদিন আগে চট্টগ্রামের কমলদহ ঝর্ণায় ট্যুর দিয়ে আসলাম। আমি এডাবেই কোভিড –১৯ মহামারীর মাঝে ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখতে পেরেছি।
লেখকঃ তাসনিম হাসান মজুমদার
শিক্ষার্থী,ইংরেজি বিভাগ, চট্টগ্রাম কলেজ (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), চট্টগ্রাম।
মোবাইল : 01630223848
Email: tasnimhasan067@gmail.com
প্রায় আটমাস আমরা কোভিড–১৯ মোকাবিলা করছি। আমাদের জীবনযাত্রা বদলে দিয়েছে করোনা এই আটমাসে আমার জীবনে নানামুখী নতুন অভিজ্ঞতার মাঝে গিয়েছে। ১৭ই মার্চ ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যায়। এর কিছুদিন পর কর্তৃপক্ষ থেকে লকডাউনের ঘোষণা আসে। আমি যে মেসে থাকতাম একে একে সবাই বাসা ছেড়ে চলে যায় গ্রামে। আমি একা হয়ে পড়ি। হঠাৎ একদিন কাজের আন্টি না বলে উনিও রাঁতের আঁধারে শহর ছাড়েন। আমি বেঁচে থাকতে আশাহত হই। তবে মনোবল হারাইনি। কাজের আন্টিকে বাজার করে দিয়েছিলাম মাছ মাংস। উনি এসব আমাকে না বুঝিয়ে দিয়েই চলে গেছেন। রাগ হয়েছিলো উনার উপর।নিয়তির উপর ছেড়ে দিয়ে রাগ প্রশমিত রাখি। এরপর আবার বাজার করে আনলাম। কোথাও কেউ নেই।শহরে জুড়ে ভুতুরে পরিবেশ। শুধু পুলিশের গাড়ির সাইরেন্স ছাড়া কিছুই শুনতে পেতাম না।এরপর জীবন যাত্রায় পরিবর্তন আনি। আমি দিনকে রাতে পরিবর্তন করি। রাতকে দিনে। দিনের আলোয় একাকিত্ব যাতে অনুভূত না হয়, এজন্য সারা কিছু টিচারের অনলাইন ক্লাস করতাম সাথে তামিল মুভি দেখতাম। সবচে বড় অভিজ্ঞতা হলো , এই সময়ে আমি রান্না শিখে গিয়েছিলাম। জীবন বাঁচানোর তাগিদে রান্না করতে হতো এই সময়টা আমাকে ডিসকভারীর Men vs Wild এর বেয়ার গ্রিলস এর প্রোগ্রামটি অনুপ্রানিত করেছে। কিভাবে প্রতিকূল পরিবেশে পজিটিভ থেকে জীবন রক্ষা করা যায়। তা আমি প্রতি মুহুর্তে স্বরণ করেছি। করোনার আগেও ঐ বাসাতে ১১ জন থাকতাম। হঠাৎ করোনা সংখ্যাটা ১১ থেকে ১ এ নামিয়ে আনলো। আমি এভাবে ৪২ দিন একা ছিলাম। একা রান্না করে খেতাম। সারাদিন ঘুমাতাম। আর সারারাত বই পড়ে বা ছবি দেখে কাটাতাম। এই সময়ে আমি কয়েকটি বই পড়েছিলাম। যেমন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রজমানের আমার দেখা নয়া চীন। ইশতিয়াক আহমেদের গতকাল উপন্যাস। সবার প্রিয় সাদাত হোসেনের ছদ্মবেশ থ্রিলারটি পড়ে ছিলাম। এই ৪২ দিন আমি একা কাঁটিয়েছি। বাসায় আম্মু জানতো আমি একা না। আমার সাথে আরো রুমমেট আছে। এরপর, প্রথম রমজান সেহেরী খেয়ে ফজর নামাজ পড়ে লকডাউনের মাঝে দীর্ঘ ১১ ঘন্টা পায়ে হেঁটে, রিক্সা ও সিএনজি করে নিজ বাসায় আসি। বাসায় এসেছি যে সাড়ে ছয় মাসের মতো । আম্মু এই সময়ে রান্না শিখেয়েছেন আমাকে। মাছ, মুরগী, গরু, খাঁসি ও স্পেশাল বিরিয়ানির খিচুড়ি সব রাঁধতে শিখিয়েছেন। মানসিক ভাবে যাতে চাঙ্গা থাকি তারজন্য ব্যায়াম করেছি বাসায়। ফ্যামিলির সাথের কোয়ালিটি টাইম কাঁটিয়েছি। কিছুদিন আগে চট্টগ্রামের কমলদহ ঝর্ণায় ট্যুর দিয়ে আসলাম। আমি এডাবেই কোভিড –১৯ মহামারীর মাঝে ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখতে পেরেছি।
লেখকঃ তাসনিম হাসান মজুমদার
University Category
GB044