১৮ মার্চ আমার বাড়ি ফেরা। ভার্সিটিতে মাত্র ২ মাস ক্লাস করার অভিজ্ঞতা।এখন যে লিখছি পুরােপুরি হয়ত মনেও নেই যে কি কি করেছি। ৭ মাস বেশ দীর্ঘ সময়। বাড়ি ফেরার সময় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০১৫ জন।এরপর পুরাে পট দৃশ্য যেন পালটে গেল। হুরহুর করে বারতে লাগ্ল আক্রান্তের সংখ্যা,মৃত্যুর সংখ্যা। বাসায় এর প্রকোপ খুব একটা বুজতে না প্রলেও টিভির স্ক্রিন,ফেসবুকের নিউজফিড ভালই বিবেকে নাড়া দিয়ে যাচ্ছিল। বাবাদের তাে প্রতিদিন ই বাইরে যেতে হচ্ছে। তাদের জন্য মানসিক বলটা বজায় রাখাটা জরুরি বেশি। তাই ভাবলাম তাদের জন্য কিছু করা যাক। এখন সকল বাবাদের সাহায্য করা হয়তাে আমার জন্য সম্ভব।তাই নিজের বাবাকে দিয়ে শুরু করলাম। খবর দেখতে পছন্দ করা বাবাকে খবর বাদ দিয়ে ইউটিউব এ বিভিন্ন ব্লগ,কুকিং শাে দেখতে আগ্রহি করে তুললাম। কিছু মেডিটেশন করতে বললাম। দুপুর বেলা কত আক্রান্ত, কারা মারা যাচ্ছে এসব দেখা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করলাম। খুঁটিনাটি খবর তাকে জানাতাম ঠিকই,কিন্তু তাকে এসব নিয়ে ভাবনা করা থেকে যতটুকু পারি বিরত রাখার চেষ্টা করা শুরু করলাম। প্রতি বিকেলে আড্ডা। ২বােন মিলে রান্না করে খাওয়ানাে। গল্প গুজব এ রাতের খাবার খাওয়া। এরপর ভাবলাম আমার মা এর জন্য কিছু করা যাক। সবার ছুটি থাকলে তার কিন্তু ছুটি নেই। বাসার সবার জন্য তার কি নিরলস প্রচেষ্টা। তার মানসিক স্থিতির জন্য তাকে নিয়ে বিকেলে ছাদে হাঁটতে যেতাম।মাঝে মাঝে তাকে রান্নায় সহায়তা করতাম। তাকে বেশ কিছু বই পরতে দিলাম। তার সাথে বসে একটু সিরিয়ালও দেখলাম।আমার কথা বলতে গেলে,অনেক অনলাইন প্রতিযােগিতা এ অংশগ্রহন করা শুরু করলাম।আবার স্কিল বাড়ানাের জন্য কোর্সে ভর্তি হয়ে গেলাম।লেখালেখি শুরু করলাম।বন্ধুদের সাথে যােগাযােগটা ও বজায়ে রাখলাম। বড় বােনের সাথে খুনসুটি তাে আছেই।আমি জানি,এই সময়টা যে কারও মানসিক স্বাস্থের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সবাই অবসাদে ভুগছে। কোন। নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছে না। সব খবর অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয়। মনে একটা ভয় থাকেই। তবে ভাল থাকাটা কিন্তু আমাদের অপরামানসিক ভাবে নিজেকে সুস্থ আর প্রফুল্ল রাখা যেকোনাে মহামারির শ্রেষ্ঠ প্রতিরােধ। শুরুটা হােক নিজের পরিবার দিয়েই। নিজের পরিবার আর নিজেকে মানসিক ভাবে সবল রেখেই ইতিবাচক মনােভাব টা ধরে রাখছি। কঠিন এই সময়ে নিজের পরিবারের সাথে থাকাটা কি অনেক ইতিবাচক না? আর এখনাে পাতে ভাত আছে, মাথার ওপর ছাদ,হাওয়া খাওয়ার জন্য ফ্যান। পরম করুনাময়ের আজ পর্যন্ত জীবিত রেখেছেন তাহলে ভরসাটাই রাখব সামনে। দেহে রােগ বাসা বাঁধলেও মনে যাতে না বাঁধে এই কামনা।
Tanjum Tahsin Hossain
University Category
GB104