GRACE is celebrating World AIDS Day`2022

বছরের শেষের শুরুটা হোক সাম্যতা ও মানসিক সুস্থতাকে প্রাধান্য দিয়ে। আসছে ১লা ডিসেম্বর ২০২২ বিশ্বজুড়ে পালিত হতে যাচ্ছে “বিশ্ব এইডস দিবস ২০২২”। এইডস আক্রান্তদের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন এবং মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তিদের স্মরণ করার পাশাপাশি এইচআইভির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে ১৯৮৮ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এই দিবসটির মূল লক্ষ্য প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টি।

উইকিপিডিয়ার মতে, এইচ.আই.ভি. (HIV-Human Immunodeficiency Virus) বা মানব প্রতিরক্ষা অভাবসৃষ্টিকারী ভাইরাস লেন্টিভাইরাস (Lentivirus) গোত্রের অন্তর্গত এক ধরনের ভাইরাস যার সংক্রমণে মানবদেহে এইডস (AIDS) রোগের সৃষ্টি হয়।

বিবিসি নিউজ বাংলা ২০২১ সালের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে এইডস আক্রান্ত রোগী মোট জনসংখ্যার ০.১% অর্থাৎ, বর্তমানে ১৪ হাজারেরও বেশি আক্রান্ত রোগী আছে। ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৫৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কমছে। তবে সচেতনতার কারণে রোগীদের সংখ্যা কমলেও এইডস আক্রান্তদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আমরা সকলে জানি এইডস রোগের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। এই রোগটিকে নিয়ে নেতিবাচক ধারণা সমাজে বেশ প্রচলিত। চিকিৎসা প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটলেও আমাদের সমাজ এখনও এই রোগটিকে গ্রহণ করতে নারাজ। নানা কুসংস্কার, ভ্রান্ত ধারণার বোঝা নিয়ে এইডস রোগীরা সমাজে বেঁচে আছে। মূলত, রোগের কারণগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় নানা ভুল ধারণা সমাজে প্রচলিত। অনেকের ধারণা মাদক সেবনের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। এভাবে এইডস আক্রান্ত রোগীদেরসমাজে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয়। এমনকি মানবাধিকার পর্যন্ত লঙ্ঘন হয়। যেমন: মানবিক আচরণ না করা, চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা, শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়া ইত্যাদি।

এসব ঘটনা শুরু থেকেই এইডস রোগীদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলে। এছাড়াও গুরুতর মানসিক চাপের কারণে স্বাভাবিক জীবন-যাপন ব্যাহত হয়। পরিবারের সাথে দূরত্ব তৈরি হয়। তাঁদের নার্ভাস সিস্টেমেও এই অবজ্ঞাগুলো প্রভাব ফেলে। নিজেকে সমাজ বহির্ভূত মনে করে একজন এইডস রোগী। ক্রমাগত অবহেলার শিকার হওয়ায় আক্রমণাত্মক হতে থাকে। অনেক সময় চিকিৎসার অর্থ যোগানের জন্য নানা অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পরে। বিষণ্নতা, মানসিক বিপর্যস্ততার চরম পর্যায়ে কখনও তাঁরা আত্মহত্যার মতো পদক্ষেপও নিয়ে থাকে।

এইডস রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্য বর্তমানে বেশ উপেক্ষিত। শারীরিক চিকিৎসা ও আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি একজন রোগীর মানসিক সুস্থতাও অত্যন্ত জরুরি। তাই আমাদের সকলের উচিত এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানসিকভাবেও সহযোগিতা করা। এই সম্পর্কিত সচেতনতা আরও জোরদার করার জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা প্রয়োজন। অকারণে রোগীকে অবহেলা করা,তাঁদেরকে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা প্রতিরোধ করা হোক। আসুন, আমরা সম্মিলিতভাবে সাম্যতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এইডস আক্রান্তদের মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করি।